স্বদেশ ডেস্ক:
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিন কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তার জামিন আবেদনের শুনানি করে আজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আগামী ২৮ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে এক সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ওইদিন মামলার কেস ডকেটসহ এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) হাইকোর্ট হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আদালতে মিন্নির দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ার আগেই তিনি এ ঘটনায় জড়িত উল্লেখ করে বরগুনার এসপি যে প্রেস কনফারেন্স করেছেন তার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতেও বলা হয়েছে।
এর আগে গতকাল সোমবার মিন্নির জামিন আবেদনের শুনানির এক পর্যায়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ মিন্নির আইনজীবী জেডআই খান পান্নাকে মঙ্গলবার (আজ) বেলা ২টার মধ্যে সম্পূরক আবেদন দাখিল করতে বলেন।
পুলিশ লাইনসে নিয়ে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ, তাকে গ্রেপ্তার দেখানো, পরদিন তাকে আদালতে হাজির করা, রিমান্ড শুনানি ও রিমান্ডে নেওয়ার পর তাকে কোথায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়- সেসব বিষয়েও বিস্তারিতভাবে জানাতে বলা হয় ওই সম্পূরক আবেদনে। পাশাপাশি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পীকেও এ বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে আসতে বলেছেন আদালত।
গত ৮ আগস্ট হাইকোর্টের একটি অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চ মিন্নিকে জামিন দেননি। সেদিন আদালত মিন্নির আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এ পর্যায়ে আসামিদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেখে আমরা তার জামিন দেব না। আমরা সর্বোচ্চ তার জামিন প্রশ্নে একটা রুল জারি করতে পারি।’ পরে মিন্নির আইনজীবীরা জামিন আবেদনটি ফেরত নেন। এর পর গত রোববার হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে জামিন আবেদনটি দাখিল করেন।
এর আগে বরগুনার ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিন্নির জামিন আবেদন খারিজ করার পর গত ৫ আগস্ট মিন্নির পক্ষে তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন।
গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়। পরে এক আসামির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।